এইচ এম বাবলু বাউফল থেকে,
বাউফলে একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের অনিয়ম,দুর্নীতি ও শেচ্ছাচারিতার কারণে ওই ইউনিয়নের লোকজন স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার প্রতিটি ইউনিয়নে,ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র গড়ে উঠালেও তদারকির অভাবে কাংখিত সুবিধা পাচ্ছেনা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ধূলিয়া ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষ। পর্যাপ্ত জনবল না থাকার অজুহাত দেখিয়ে কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।এর কারণ দেখিয়ে বছরের পর বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি থাকছে বন্ধ। মাঝে মাঝে খোলা থাকলেও রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে না।
সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌছে দেওয়ার লক্ষে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে ১২টি ইউনিয়নে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে গড়ে তুলেছেন। এর মধ্যে বাউফল সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ধূলিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যান কেন্দ্র। নদী তীরবর্তী ইউনিয়নটির অধিকাংশ লোকের পেশা হচ্ছে মাছ ধরা ও কৃষিকাজ। উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা দূরত্ব হওয়ায় ওই স্থানের মানুষদের নির্ভর করতে হয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যান কেন্দ্রেটির উপর। হাসপাতালটিতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও শিশুদের জন্য মূল্যবান ঔষধ সামগ্রী দিলেও তা নিয়ে আছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ । এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মালামাল কোথায় যায় স্থানীয়রা জানেননা। তবে সরকারি ঔষধ রোগীদের ভাগ্যে না জুটলেও দেখা মেলে সংশ্লিষ্ট অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাসায়। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ফার্মাসিস্ট, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, অফিস সহায়ক ও একজন আয়া থাকার কথা। অফিস সহায়ক ছাড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটির কোন পদেই জনবল নাই। একজন অফিস সহায়ক থাকলেও অন্যান্য কর্মকর্তারা অফিসে না আসায় তিনি অফিসে আসেননা। স্থানীয়রা স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি থেকে একসময় সেবা পেলেও প্রায় ২ বছর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অফিসটির প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও কাগজপত্র পরে আছে অযত্ন অবহেলায়। অফিসে কোন কর্মচারী বা কর্মকর্তা না থাকলেও দিন রাত জ্বালিয়ে রাখা হয় বৈদ্যুতিক বাল্ব।
স্থানীয়রা জানান,মাঝে মাঝে জাতীয় দিবসে এসে পতাকা টানালেও তা মানা হয় না সঠিক নিয়ম। একবার টানানো হলেও তা উড়তে থাকে মাসের পর মাস।স্থানীয় রোগীদের অভিযোগ আমরা প্রয়োজনীয় সময় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে ডাক্তার দেখাতে আসলে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পাই। কিন্তু হাসপাতালের মধ্যে দিনরাত ফ্যান ও লাইট জ্বলতে দেখি।’
এ বিষয়েধুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির জানান, হাসপাতালটি দুই থেকে আড়াই বছর ধরে তালাবদ্ধ। বিষয়টি বাউফলের কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তাদের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও অব্যাহত দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বদনাম সরকারের উপর বর্তাবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. সানজিদা বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি, তবে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি সপ্তাহে দুদিন ধূলিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কল্যান কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন। আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। জনবল দেওয়া হলে বিশেষ করে মা ও শিশু সুরক্ষায় ভূমিকা রাখতে পারবো। উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের নীতিবাচক বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিবার পরিকল্পনার উপ পরিচালক আ.ফ.ম আরাফাত হোসেন জানান, বাউফলে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি সব বলতে পারবেন; আমি কিছুই জানিনা।
তবে এলাকার ভুক্তভোগী মানুষের দাবি,সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে,স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিয়মিত চালু রাখার ব্যবস্থা করে দিবেন।