রিপোর্ট মো. শাহাদাত হোসেন তালুকদার (সাকু)
দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশী সময় কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গোয়ালমারী ইউনিয়নের দৌলতেরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন সেলিনা আক্তার। আজ ছিল তার শিক্ষকতা জীবনের শেষ কর্মদিবস। এদিন প্রিয় শিক্ষককে অবসর জনিত বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছে বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও বর্তমান-প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। আর এ আয়োজন করেনে দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
১৯৯৪ সালে নিজের শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন সেলিনা আক্তার। একে একে কেটে গেছে প্রায় ৩০ বছর। শুরুর দিক থেকেই গণিত বিষয়ে পাঠদান করতেন তিনি। শিক্ষার্থীদের কাছে তার পরিচয় ছিল মমতাময়ী মা হিসেবেই।
শিক্ষকতা জীবনের শেষ কর্মদিবসে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার সহকর্মীদের পাশাপাশি উপস্থিত হন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। প্রিয় শিক্ষককে অশ্রুসজল নয়নে বিদায় দেন তারা। সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশের।
পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর বিদায়ী শিক্ষককের ফুল দিয়ে বরণ করা হয় । তার হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মানসূচক ক্রেস্ট। শিক্ষার্থীরা তাদের প্রিয় শিক্ষকের স্মৃতিচারণ করেন। শিক্ষাগুরুকে পুষ্পমাল্য ও বিভিন্ন উপহার দিয়ে সম্মানিত করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালমারী ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান ও অত্র প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য আহমেদ হোসেন তালুকদার। তিনি বলেন, যেকোনো বিদায় বেদনার, কষ্টের। সেলিনা ম্যাডামের মতো শিক্ষক এদেশের সম্পদ, তারাই সোনার মানুষ গড়ার কারিগর। তার অনুপস্থিতিতে এ বিদ্যালয় তার শুন্যতা অনুভব করবে। সবকিছুরই শেষ আছে, না চাইলেও একদিন ঠিকই বিদায় বলতে হয়। আমি তার অবসর জীবনের মঙ্গল কামনা করি। আর এ ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় বিদ্যালয়ের দেশে ও প্রবাসে থাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সকলকে ধন্যবাদ জানাই। আরো উপস্থিত ছিলেন দাতা সদস্যের বড় বোন নারগিছ তালুকদার
তিনি আরো বলেন বলেন, সেলিনা আক্তার তার কর্মজীবনে অনেক শিক্ষার্থীকে পড়িয়েছেন, সত্যিকারের মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। তারা দেশের কল্যাণে অনেক বড় বড় জায়গা থেকে ভূমিকা রাখছেন। তিনি তার শিক্ষার্থীদের মাঝে নিজের কাজের মাধ্যমে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন আজীবন। আমি তার নতুন যাত্রার শুভকামনা করছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারুল আক্তার বলেন, আজ সত্যিই আমাদের জন্য বেদনার দিন, মন খারাপের দিন। সেলিনা ম্যামকে আর কোনোদিন ক্লাসে পাব না ভাবতেই খারাপ লাগছে। সহকর্মী হিসেবে তার কাছে অনেক কিছু শিখেছি, অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। তার ন্যায়পরায়নতা, কর্মদক্ষতা, সততা ও সময়ানুবর্তিতা আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। তিনি নিজ সন্তানদেরকে যেভাবে মানুষ করেছেন, তেমনি করে ছাত্র-ছাত্রীদেরকেও তিনি যোগ্য করে গড়ে তুলেছেন। তার অবসর জীবনের মঙ্গল কামনা করি।
বিদায়ী শিক্ষক সেলিনা আক্তার অশ্রুসজল
চোখে বিদ্যালয়ের সকল সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন……
অত্র অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারুল আক্তারের সভাপতিত্বে ও মুক্তার প্রধান এর সঞ্চালনায় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জীবন মেম্বার,গোলাম হোসেন সরকার, বকুল শিকদার,খোকন প্রধান, হারুন বেপারী, নজরুল তালুকদার,মিজানুর রহমান সরকার, সাদেক মিয়া,মাহফুজ মোল্লা সহ বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবক, প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীবৃন্দ।
দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত প্রাক্তন শিক্ষার্থী যাদের যাদের আয়োজনে আজকের এই অনুষ্ঠান তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহসীন, সালেহ মুছা, ইব্রাহিম মুন্সী, হানিফ মিয়াজী,জনি, সালেহ আহমেদ প্রমুখ
মন্তব্য