[ঢাকা, ১৪ মে ২০২৩] ক্রেয়নম্যাগ আয়োজিত ক্যালিগ্রাফি এবং টাইপোগ্রাফি প্রদর্শনী ‘বর্ণমালা’ র শেষদিন ছিল আজ ১৩ মে৷ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সকাল থেকেই ছিল দর্শনার্থীদের আনাগোনা৷ দুপুর ৩.৩০ এ শুরু হয় ‘বর্ণমালা’র সমাপনী আয়োজন।
বাংলাদেশের সকল ভাষাভাষী মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গত ১১ মে বৃহস্পতিবার ক্রেয়নম্যাগ আয়োজন করে এই লিপিচিত্র প্রদর্শনীর৷ আয়োজনের শেষদিনে যেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্মাতা ও অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী এবং কবি ও সাহিত্যিক ভাষা সৈনিক অসীম সাহা।
সমাপনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যের শুরুতে মুক্তিযোদ্ধা অ্যারোমা দত্ত বলেন, “বরাবরের মতো ক্রেয়নম্যাগ তার ভিন্নধর্মী পরিচয় বজায় রেখেছে৷ ইংরেজি, আরবি এসব ভাষা নিয়ে লিপিচিত্র অনেক হয়। বাংলা ভাষা, আদিবাসীদের ভাষা নিয়ে এরকম আয়োজন সত্যিই সময়োপযোগী।”
অনুষ্ঠানে অতিথিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন সাধারন দর্শনার্থী ছাড়াও প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া শিল্পীদের অনেকেই। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেছেন৷ অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন অরূপ বাউল, জান্নাতুল ফেরদৌস, শুভ্র ধর, আব্দুল বাতেন সরকার, মনোয়ার হোসেন শাহ, মো: মোরসালিন বিন কাশেম, ওবাইদুল্লাহ ওমর, উপল রায় চৌধুরী, মেহনাজ তাবাসসুম সহ আরও অনেকে। আয়োজনের শেষাংশে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সনদপত্র।
এই আয়োজনে সাসটেনেবল ফ্যাশন এক্টিভিস্ট, শিল্পী ফায়জা আহমেদ অংশ নিয়েছেন তার শিল্প সম্ভার নিয়ে৷ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে হল গ্যালারি ৬ এর এক অংশ জুড়ে সাজানো রয়েছে তার শাড়ির সম্ভার। সেইসব শাড়িতে রয়েছে নানা রঙের, নানা বর্ণের ক্যালিগ্রাফি৷
সনদপত্র হাতে পেয়ে নিজের অভিব্যক্তি জানিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “এরকম কোন প্রদর্শনীতে এই প্রথম আমার কাজের মাধ্যমে অংশ নিয়েছি৷ খুবই ভালো লাগছে আমার৷ ‘বর্ণমালা’র মতো আমাদের ভাষাকে নিয়ে এরকম ক্যালিগ্রাফি, টাইপোগ্রাফির আয়োজন আরও হওয়া উচিত৷”
ক্রেয়নম্যাগের প্রতিষ্ঠাতা তানজিরাল দিলশাদ দিতান বলেন, “গত বছর থেকে আমরা ক্যালিগ্রাফির প্রদর্শনী শুরু করি৷ এবছর বাংলা ভাষা ছাড়াও আমরা বাংলাদেশের সব ভাষার প্রতি দৃষ্টি দিয়েছি৷ এই আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো আমাদের বর্ণমালার সংরক্ষন করা। ক্রেয়নম্যাগ বরাবরই চেয়েছে আমাদের নিজেদের সংস্কৃতি, নিজেদের ঐতিহ্যকে ধারন করতে এবং আমাদের কাজের মধ্যে দিয়ে তার পরিস্ফুটন ঘটাতে৷ গত বইমেলাতে বাংলা ভাষাতে আমাদের প্রথম বই ‘অসময়ের ডাক’ প্রকাশিত হয়েছে৷ এবারের প্রদর্শনী থেকে নির্বাচিত শিল্পকর্মগুলোকে নিয়েও পরবর্তীতে কফি টেবিল বুক বের করবো আমরা।” পরবর্তীতে বর্ণমালার আয়োজন আরো বড় পরিসরে হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
১১ তারিখ বর্ণমালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথা-সাহিত্যিক, লেখক ও ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন, সালমা আদিল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা লায়ন সালমা আদিল এম জে এফ, ইউ এন ডি পি এর প্রোজেক্ট ম্যানেজার রেবেকা সুলতানা এবং বাংলা একাডেমির আজীবন সদস্য কবি গুলশান-ই-ইয়াসমীন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সালমা আদিল বলেন, “বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসারে ক্রেয়নম্যাগ দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে৷ বর্ণমালা প্রদর্শনীটি সেই উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ আমি আশাকরি এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষা নিয়ে আরও বেশি সচেতন হবে।”
ব্যাকপেজ পি আর -এর পি আর সহযোগিতায় ক্রেয়নম্যাগ আয়োজিত এই প্রদর্শনীতে নলেজ পার্টনার হিসেবে রয়েছে ইউ এন ডি পি এবং প্রচার সহায়তায় রয়েছে ভলেন্টিয়ার অপরচুনিটিজ।
মন্তব্য